ভাগ্য যেন ইউরোর বিপরীত দিকেই হাটছে। একদিকে ইসিবির ডোভিশ মনোভাবে দুর্বল হচ্ছে ইউরো, অপরদিকে ফেডের সুদের হার বাড়ানোর আশায় ট্রেডারদের আগ্রাসী মনভাবে ডলার ক্রমেই শক্তিশালী হচ্ছে। তাই আজ ডলারের বিপরীতে ইউরো ৭ মাসের সর্বনিম্ন প্রাইসে নেমে এসেছে। ডলার ইনডেক্সও শক্তিশালী হয়ে ৯৯.৫০ তে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে এখান থেকে কি হবে ইউরোর গন্তব্য সেটাই এখন ট্রেডারদের প্রশ্ন। বেশিরভাগ ট্রেডারই বুঝতে পারছেন না মার্কেটের পরবর্তী গতিবিধি।
সপ্তাহের প্রথম ২ দিন সোমবার এবং মঙ্গলবারে ডলার এবং ইউরো সম্পর্কে খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ নিউজ ছিল না। কিন্তু সপ্তাহের শেষ ৩ দিনে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিউজ আছে, যেগুলো মার্কেটের গতিবিধি পাল্টে দিতে পারে বলেই ধারনা করা হচ্ছে। বুধবার সন্ধ্যা ৭:১৫ তে ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংক প্রেসিডেন্ট মারিও দ্রাঘি লন্ডনে বক্তিতা রাখবেন। তবে ইউরোর ব্যাপারে আশাব্যাঞ্জক কিছু বলবেন কিনা সেটাই এখন দেখার বিষয়। তার বক্তব্য থেকে সুদের হার কমানো এবংQuantitative Easing বিষয়ক আভাস আসতে পারে। এছাড়া বুধবার পাউন্ডের জন্যেও ২টি গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট রয়েছে।
বর্তমানে ইউরো ১.০৬৮৫ এরিয়াতে ট্রেড হচ্ছে এবং ইউরো ১.০৭০০ এরিয়া ভেঙ্গে ওপরে ওঠার চেষ্টা করছে। ১.০৬৬০ তে একটি শক্তিশালী সাপোর্ট রয়েছে। ইউরো ১.০৬৭৩ তে গিয়েও আজ আবার ফেরত এসেছে। ২১ এপ্রিলের সর্বনিম্ন প্রাইস সাপোর্ট ১.০৬৬০ ভাঙ্গতে পারলে ইউরো পরবর্তী ১.০৬২৪ (১৬ এপ্রিলের সর্বনিম্ন) এবং ১.০৫৭০ (১৫ এপ্রিলের সর্বনিম্ন) তে বাধা পেতে পারে। অপরদিকে ১.০৭ ভেঙ্গে ওপরে উঠতে পারলে EU এর জন্য পরবর্তী রেসিসট্যান্স হবে ১.০৭৯০ (৯ নভেম্বরের সর্বোচ্চ), ১.০৮৯৬ (৫ নভেম্বরের সর্বোচ্চ) এবং ১.০৯৬৬ (৪ নভেম্বরের সর্বোচ্চ).
১.০৭০০ ছিল ইউরোডলারের জন্য একটি শক্তিশালী সাইকোলজিক্যাল লেভেল। তবে কী রেসিসট্যান্স লেভেল হিসেবে এখন ১.০৭০৫ এরিয়াটি কাজ করছে। এখন ১.০৬৬০ এর সাপোর্ট ভাঙ্গলে পেয়ারটি আরও নিচে নামতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে। আমাদের পূর্বের ধারনা মোতাবেক EURUSD ১.০৭ লেভেল আগেই ভেঙ্গেছে। এখন পরবর্তী টার্গেট ০.০৫ এরিয়াতে যায় কিনা সেটাই দেখার পালা। তবে এ পর্যায়ে ভালো ভাবে অ্যানালাইসিস না করে সেল ট্রেডে যাওয়া ট্রেডারদের জন্য বোকামি হবে। কারণ, এ পর্যায় থেকে ইউরো আবার ওপরের দিকে ফেরত যেতে পারে।
বুধবারের গুরুত্বপূর্ণ নিউজঃ
দুপুর ৩:৩০ এ প্রকাশিত হবে UK Unemployment Rate রিপোর্ট। ইউকের শ্রমবাজার পূর্বের তুলনায় অনেক ভালো অবস্থানে রয়েছে। ২০০৮ সালের পর এবার আবার বেকারত্বের হার এত নিচে রয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসের বেকারত্বের হার এসেছিল ৫.৪% এবং অক্টোবরের হারও ৫.৪% এ থাকবে বলেই আশা করা হচ্ছে।
বিকেল ৪:৩০ এ ব্যাংক অফ ইংল্যান্ডের গভর্নর মার্ক কার্নে বক্তব্য রাখবেন। গত সপ্তাহে প্রকাশিত ইনফ্লাশন রিপোর্টের ব্যাপারেই তিনি কথা বলবেন। স্টেটমেন্টের তিনি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন আগামী ২ বছর সুদের হার নাও বাড়তে পারে। তিনি বলেছিলেন ২০১৭ এর মাঝামাঝি পর্যন্ত সুদের হার পরিবর্তন না হলে মুদ্রাস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রার ২% এ যেতে পারে।
সন্ধ্যা ৭:১৫ তে ECB (ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংক) প্রধান মারিও দ্রাঘি লন্ডনে বক্তব্য রাখবেন। তিনি সুদের হার কমানো এবং Quantitative Easing সম্পর্কে কথা বলতে পারেন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন