ব্রেক্সিটের ধাক্কায় এমনিতেই ইউরোপ কাহিল, তার মধ্যে মরার উপর খরার ঘা হতে পারে ফ্রান্সের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন। আসন্ন নির্বাচনে মেরিনে লে পেন নির্বাচিত হলে তা ব্রেক্সিটের থেকেও মারাত্মক হবে। কেননা এতে ইউরোর অস্তিত্বই ধ্বংসের মুখে পড়তে পারে, ট্রেডাররা হারাতে পারেন EUR/USD ট্রেড করার সুযোগ।
এক নজরে ফ্রান্সের জাতীয় নির্বাচন
কবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে?
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইলেকশন প্রক্রিয়া বাংলাদেশ থেকে বেশ ভিন্ন। জনগন সরাসরি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দেন। প্রেসিডেন্ট হতে হলে একজন প্রার্থীকে নুন্যতম ৫০ শতাংশ ভোট পেতে হবে। আসন্ন নির্বাচনে ৫ জন প্রার্থী লড়বেন। ভোট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ২৩ শে এপ্রিল। কোন প্রার্থীই ৫০ শতাংশ এর বেশি ভোট না পেলে, সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া দুইজন প্রার্থীর মধ্যে থেকে একজনকে নির্বাচনের জন্য আবার ভোট হবে ৭ মে, যেটাকে ভোটের দ্বিতীয় রাউন্ড বলা হয়। কোন প্রার্থীই যে প্রথম রাঊন্ডে সরাসরি বিজয়ী হতে পারবেন না, তা নিশ্চিত। তাই, দ্বিতীয় রাউন্ডের ভোটের উপরই সব নির্ভর করবে।
প্রেসিডেন্ট প্রার্থীগন
মোট ৫ জন প্রার্থীর মধ্যে ভোটের লড়াই অনুষ্ঠিত হলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বীতা হবে মূলত মধ্য ডানপন্থী রিপাবলিকান পার্টি প্রার্থী Francois Fillon, চরম ডানপন্থী Marine Le Pen এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী Emmanuel Macron এর মধ্যে। এছাড়াও রয়েছেন বামপন্থী Benoît Hamon ও Jean-Luc Mélenchon।
সর্বশেষ জন্মত জরীপে বেশ কিছুদিন ধরেই এগিয়ে রয়েছেন ফ্রান্সের ডোনাল্ড ট্রাম্প, মেরিনে লে পেন। তীব্র অধিবাসী, শরণার্থী ও ইসলাম বিরোধী মেরিনে লে পেন ইউরোপিয়ান কারেন্সি ইউরোর বিপক্ষে। ক্ষমতায় গেলে তিনি ফ্রান্সের নিজস্ব কারেন্সি চালুর ঘোষণা দিয়েছেন। এছাড়া ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের বিভিন্ন নীতির কট্টর বিরোধীও তিনি। মূলত, সাম্প্রতিক সময়ে ফ্রান্সে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন সন্ত্রাসী হামলার কারনেই জনপ্রিয়তা পেয়েছেন তিনি এবং এটাকেই পুজি করে তিনি ক্ষমতায় যেতে চান। গতকালের জনমত জরীপ অনুসারে (The Elabe poll), ২৬ শতাংশ সমর্থন নিয়ে এই মুহূর্তে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন লে পেনই।
তবে, খুব দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে উঠছেন এমানুয়েল ম্যাক্রন। ২৫.৫ শতাংশ ভোট নিয়ে লে পেনের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছেন তিনি। বয়সে তরুন মাক্রন (৩৯ বছর), ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সবচেয়ে বড় সমর্থক। এছাড়া শরণার্থীদের প্রতিও তুলনামুলক উদার দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে তার। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সাথে মিলে মিশে সীমান্ত, সন্ত্রাস, বেকারত্বসহ বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের পক্ষে তিনি।
বর্তমান প্রেসিডেন্ট ফিলন জনমত জরীপে অবস্থান করছেন তৃতীয় অবস্থানে। মূলত তাকেই লে পেনের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবা হলেও, স্ত্রীকে বিনা কাজে সরকারী চাকুরীর নামে অর্থ দেওয়ার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ চলছে। এর ফলে দ্রুতই জনপ্রিয়তা হারাচ্ছেন তিনি।
নির্বাচনে যা হতে পারে
আগেই বলা হয়েছে যে, প্রথম রাউন্ডে কোন প্রার্থীই ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পাবেন না। ধারনা করা হচ্ছে, মেরিনে লে পেন ও ম্যাক্রন এর মধ্যে দ্বিতীয় রাউন্ডের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। তবে মজার ব্যাপার হল, ২৬ শতাংশ জনপ্রিয়তা নিয়ে বর্তমানে সবচেয়ে এগিয়ে থাকলেও, ফ্রান্সের অধিকাংশ মানুষ তার চরম ডানপন্থী নীতির বিরুদ্ধে। এখন পর্যন্ত সবগুলো জনমত জরীপ বলছে যে, প্রথম রাউন্ডে তিনিই বিজয়ী হলেও দ্বিতীয় রাউন্ডে তিনি হেরে যাবেন ম্যাক্রন বা ফিলনের কাছে। (ম্যাক্রন বা ফিলন পাবেন ৬০ শতাংশ, লে পেন পাবেন ৪০ শতাংশ) । তবে, জনমত জরীপও যে ভুল হতে পারে, তা তো সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনেই দেখা গিয়েছে।
যে কারনে একজন ফরেক্স ট্রেডারের কাছে এই নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ
জার্মানির পরেই ইউরোপের দ্বিতীয় প্রধান পরাশক্তি হচ্ছে ফ্রান্স। ফ্রান্স ছাড়া ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন খুবই দুর্বল হয়ে পড়বে। যদি লে পেন নির্বাচিত হয়ে ইউরোর বদলে নিজস্ব মুদ্রা চালু করেন, তাহলে অস্তিত্বের সংকটে পড়বে ইউরো। বর্তমানে, গ্রিসসহ অনেক দেশই ইউরোর মূল্যায়নের কারনে ক্ষতিগ্রস্ত। ফ্রান্স ইউরো থেকে বের হয়ে গেলে, তারাও এর সুযোগ নিতে চেষ্টা করবে। লে পেন নির্বাচিত হলে, ইউরো এর মেজর কারেন্সি পেয়ারগুলো ১০০০ পিপস এর বেশি দুর্বল হয়ে যেতে পারে। এমনকি, EUR/USD এর সর্বকালের সর্বনিম্ন প্রাইসের রেকর্ডও ভেঙ্গে যেতে পারে। অন্যদিকে, ম্যাক্রন নির্বাচিত হলে ইউরো তাৎক্ষনিক কয়েকশ পিপস শক্তিশালী হবে। তবে, ইউরো দীর্ঘমেয়াদে দুর্বল থাকায়, তা খুব বেশি সময় স্থায়ী নাও হতে পারে।
এটাতো গেল শুধুমাত্র নির্বাচনের দিনের কথা। ফ্রান্সের ইলেকশনের প্রভাব এখনই পড়তে শুরু করেছে ফরেক্স মার্কেটে। সাম্প্রতিক সময়ে যখনই জনমত জরীপে লে পেনের এগিয়ে থাকার খবর আসছে, ইউরো তাৎক্ষনিকভাবে দুর্বল হচ্ছে। এমনটা চলবে ৭ মে পর্যন্ত। আর তাই, নির্বাচনের দিন আপনি ট্রেড করুন আর নাই করুন, চাইলেই এই নির্বাচন থেকে আপনি নিজেকে সরিয়ে রাখতে পারছেন না।
ব্রেক্সিটের মতই ফ্রান্সের নির্বাচনের সমস্ত আপডেট পাওয়া যাবে বিডিপিপসে। এছাড়াও, নির্বাচনের দিন FXBD এর বিশেষ কাভারেজ থাকবে।
এক নজরে ফ্রান্সের জাতীয় নির্বাচন
কবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে?
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইলেকশন প্রক্রিয়া বাংলাদেশ থেকে বেশ ভিন্ন। জনগন সরাসরি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দেন। প্রেসিডেন্ট হতে হলে একজন প্রার্থীকে নুন্যতম ৫০ শতাংশ ভোট পেতে হবে। আসন্ন নির্বাচনে ৫ জন প্রার্থী লড়বেন। ভোট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ২৩ শে এপ্রিল। কোন প্রার্থীই ৫০ শতাংশ এর বেশি ভোট না পেলে, সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া দুইজন প্রার্থীর মধ্যে থেকে একজনকে নির্বাচনের জন্য আবার ভোট হবে ৭ মে, যেটাকে ভোটের দ্বিতীয় রাউন্ড বলা হয়। কোন প্রার্থীই যে প্রথম রাঊন্ডে সরাসরি বিজয়ী হতে পারবেন না, তা নিশ্চিত। তাই, দ্বিতীয় রাউন্ডের ভোটের উপরই সব নির্ভর করবে।
প্রেসিডেন্ট প্রার্থীগন
মোট ৫ জন প্রার্থীর মধ্যে ভোটের লড়াই অনুষ্ঠিত হলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বীতা হবে মূলত মধ্য ডানপন্থী রিপাবলিকান পার্টি প্রার্থী Francois Fillon, চরম ডানপন্থী Marine Le Pen এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী Emmanuel Macron এর মধ্যে। এছাড়াও রয়েছেন বামপন্থী Benoît Hamon ও Jean-Luc Mélenchon।
সর্বশেষ জন্মত জরীপে বেশ কিছুদিন ধরেই এগিয়ে রয়েছেন ফ্রান্সের ডোনাল্ড ট্রাম্প, মেরিনে লে পেন। তীব্র অধিবাসী, শরণার্থী ও ইসলাম বিরোধী মেরিনে লে পেন ইউরোপিয়ান কারেন্সি ইউরোর বিপক্ষে। ক্ষমতায় গেলে তিনি ফ্রান্সের নিজস্ব কারেন্সি চালুর ঘোষণা দিয়েছেন। এছাড়া ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের বিভিন্ন নীতির কট্টর বিরোধীও তিনি। মূলত, সাম্প্রতিক সময়ে ফ্রান্সে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন সন্ত্রাসী হামলার কারনেই জনপ্রিয়তা পেয়েছেন তিনি এবং এটাকেই পুজি করে তিনি ক্ষমতায় যেতে চান। গতকালের জনমত জরীপ অনুসারে (The Elabe poll), ২৬ শতাংশ সমর্থন নিয়ে এই মুহূর্তে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন লে পেনই।
তবে, খুব দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে উঠছেন এমানুয়েল ম্যাক্রন। ২৫.৫ শতাংশ ভোট নিয়ে লে পেনের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছেন তিনি। বয়সে তরুন মাক্রন (৩৯ বছর), ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সবচেয়ে বড় সমর্থক। এছাড়া শরণার্থীদের প্রতিও তুলনামুলক উদার দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে তার। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সাথে মিলে মিশে সীমান্ত, সন্ত্রাস, বেকারত্বসহ বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের পক্ষে তিনি।
বর্তমান প্রেসিডেন্ট ফিলন জনমত জরীপে অবস্থান করছেন তৃতীয় অবস্থানে। মূলত তাকেই লে পেনের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবা হলেও, স্ত্রীকে বিনা কাজে সরকারী চাকুরীর নামে অর্থ দেওয়ার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ চলছে। এর ফলে দ্রুতই জনপ্রিয়তা হারাচ্ছেন তিনি।
নির্বাচনে যা হতে পারে
আগেই বলা হয়েছে যে, প্রথম রাউন্ডে কোন প্রার্থীই ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পাবেন না। ধারনা করা হচ্ছে, মেরিনে লে পেন ও ম্যাক্রন এর মধ্যে দ্বিতীয় রাউন্ডের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। তবে মজার ব্যাপার হল, ২৬ শতাংশ জনপ্রিয়তা নিয়ে বর্তমানে সবচেয়ে এগিয়ে থাকলেও, ফ্রান্সের অধিকাংশ মানুষ তার চরম ডানপন্থী নীতির বিরুদ্ধে। এখন পর্যন্ত সবগুলো জনমত জরীপ বলছে যে, প্রথম রাউন্ডে তিনিই বিজয়ী হলেও দ্বিতীয় রাউন্ডে তিনি হেরে যাবেন ম্যাক্রন বা ফিলনের কাছে। (ম্যাক্রন বা ফিলন পাবেন ৬০ শতাংশ, লে পেন পাবেন ৪০ শতাংশ) । তবে, জনমত জরীপও যে ভুল হতে পারে, তা তো সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনেই দেখা গিয়েছে।
যে কারনে একজন ফরেক্স ট্রেডারের কাছে এই নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ
জার্মানির পরেই ইউরোপের দ্বিতীয় প্রধান পরাশক্তি হচ্ছে ফ্রান্স। ফ্রান্স ছাড়া ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন খুবই দুর্বল হয়ে পড়বে। যদি লে পেন নির্বাচিত হয়ে ইউরোর বদলে নিজস্ব মুদ্রা চালু করেন, তাহলে অস্তিত্বের সংকটে পড়বে ইউরো। বর্তমানে, গ্রিসসহ অনেক দেশই ইউরোর মূল্যায়নের কারনে ক্ষতিগ্রস্ত। ফ্রান্স ইউরো থেকে বের হয়ে গেলে, তারাও এর সুযোগ নিতে চেষ্টা করবে। লে পেন নির্বাচিত হলে, ইউরো এর মেজর কারেন্সি পেয়ারগুলো ১০০০ পিপস এর বেশি দুর্বল হয়ে যেতে পারে। এমনকি, EUR/USD এর সর্বকালের সর্বনিম্ন প্রাইসের রেকর্ডও ভেঙ্গে যেতে পারে। অন্যদিকে, ম্যাক্রন নির্বাচিত হলে ইউরো তাৎক্ষনিক কয়েকশ পিপস শক্তিশালী হবে। তবে, ইউরো দীর্ঘমেয়াদে দুর্বল থাকায়, তা খুব বেশি সময় স্থায়ী নাও হতে পারে।
এটাতো গেল শুধুমাত্র নির্বাচনের দিনের কথা। ফ্রান্সের ইলেকশনের প্রভাব এখনই পড়তে শুরু করেছে ফরেক্স মার্কেটে। সাম্প্রতিক সময়ে যখনই জনমত জরীপে লে পেনের এগিয়ে থাকার খবর আসছে, ইউরো তাৎক্ষনিকভাবে দুর্বল হচ্ছে। এমনটা চলবে ৭ মে পর্যন্ত। আর তাই, নির্বাচনের দিন আপনি ট্রেড করুন আর নাই করুন, চাইলেই এই নির্বাচন থেকে আপনি নিজেকে সরিয়ে রাখতে পারছেন না।
ব্রেক্সিটের মতই ফ্রান্সের নির্বাচনের সমস্ত আপডেট পাওয়া যাবে বিডিপিপসে। এছাড়াও, নির্বাচনের দিন FXBD এর বিশেষ কাভারেজ থাকবে।
ধন্যবাদ।
উত্তরমুছুনধন্যবাদ।
উত্তরমুছুন